রংপুরের কাউনিয়ায় মারা যাওয়ার পাঁচ বছর পর কবর থেকে মাংস বিক্রেতা মনজুম আলী (৫২) লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে জেলা প্রশাসনের সককারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাসেমের উপস্থিতিতে উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের নাজিরদহ গ্রামে পাবলিক কবর স্থাল থেকে তাঁর লাশ উত্তোলন করে সিআইডি।
নিহত মনজুম আলী হারাগাছ নাজিরদহ গ্রামের মৃত ফজল উদ্দিনের ছেলে।
মনজুমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অভিযোগ এনে তাঁর ছোট ভাই মনিরুজ্জামান (৩০) বাদী হয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ছবি সংগৃহীত
আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত পায় সিআইডি, মামলার তদন্তের স্বার্থে এবং মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার মনজুমের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
মামলার বাদী মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার আগে আমার ভাই আসামীদের কাছে পাওনা টাকা চাইতে যায়। টাকা চাওয়ায় আসামীরা আমার ভাইয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়।
পরে পাওনা টাকা চাওয়াকে ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারী রাতে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ভাইকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে একতাব্রিজের পাশে তিস্তার শাখা নদীর কাছে হত্যা করে।
পরে রাতে লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি গ্রামের কয়েকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাকে জানানো হয় তার ভাই নদীর পাড়ে জুয়া খেলার সময় লোকজনকে দেখে পালাতে গিয়ে তিস্তার শাখা নদী ডুবে মারা গেছে বলে প্রচার করা হয়েছে। পরে খোঁজ খবর নিয়ে তিনিজানতে পারেন তার ভাই পানিতে ডুবে মারা যায়নি। তাকে হত্যা করে দুর্ঘটনা বলে প্রচার করা হয়েছে।
তবে আসামীরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ২০২০ সালে ভয়াবহ করোনাকালীন সময়ে জনসমাগম নিষিদ্ধ ছিল। ঘটনারদিন রাতে ওই ব্যক্তি আরো কয়েকজনকে নিয়ে তিস্তার শাখা নদীর পাড়ে জুয়া খেলতে ছিল। রাতের বেলায় গ্রামীন সড়কে আলো দেখে প্রশাসনের গাড়ী ভেবে জুয়ারীরা পালাতে গিয়ে সাঁতার না জানায় তিস্তার শাখা নদীতে ডুবে মারা যায় ওই ব্যক্তি। খবর পেয়ে পুলিশ এসেছিল কিন্তু সেই সময় নিহতের পরিবার অভিযোগ করতে রাজী হয়নি। অথচ ঘটনার চারবছর পর বাদী প্রতিহিংসার আক্রোশে মামলা দায়ের করেছে।
তারা বলেন, মামলায় মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ করা হয়ে ১৯ জানুয়ারী ২০২০ অথচ ইউনিয়ন পরিষদে মৃত্যু নিবন্ধনে উল্লেখ আছে ১৪ এপ্রিল ২০২০। তাহলে কোনটি সঠিক।
মামলার তদন্তকারী রংপুর সিআইডির এসআই গোলাম মাওলা রাব্বি বলেন, বাদী তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ এনে উপজেলার নাজিরদহ গ্রামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নিদের্শে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। হাসপাতালের মর্গে ফরেনসি পরীক্ষা শেষে মরদেহ আবার কবরস্থ করা হবে।