০২:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হারি বৈসু’র মধ্যদিয়ে খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসব শুরু

হারি বৈসু’র মধ্যদিয়ে খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু উৎসব শুরু উপলক্ষে খাগড়াছড়ি পাহাড়ের উপর ‘দেবতা পুকুরের ভীর জমিয়েছেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নর নারীরা।

ত্রিপুরাদের ধারণা, স্থানীয় ব্যক্তিদের আশীর্বাদস্বরূপ দেবতা নিজে এ পুকুর করে দিয়েছেন। তাদের মতে, এ পুকুরে গোসল করলে মনোবাসনা পূরণ হয়। খাগড়াছড়ি শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের ওপর এই পুকুরের অবস্থান। প্রতিবছর বৈসুকে কেন্দ্র করে এখানে তীর্থ মেলা বসে।
নুনছড়ি গ্রাম থেকে এক কিলোমিটারের পাহাড়ি পথ বেয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠলেই দেবতা পুকুর। এ পুকুরের স্বচ্ছ স্থির জলরাশি তীর্থযাত্রীদের মনে প্রশান্তি জোগায়।
সবুজ অরণ্যবেষ্টিত দেবতার পুকুরের দৈর্ঘ্য প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট এবং গড় প্রস্থ ৬০০ ফুটের মতো। সময়ের ব্যবধানে ‘দেবতা পুকুর’ স্থানীয় ত্রিপুরাদের তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিতে দেবতা পুকুরে বসে তীর্থ মেলা এবং তান্ত্রিক বিধান মতে ত্রিপুরাগণ যাগযজ্ঞাদি করে।
ত্রিপুরা জনঅধ্যুষিত এলাকায় এর অবস্থান বলে এটি ত্রিপুরা ভাষায় ‘মাতাই পুখিরী’ নামেই অধিক পরিচিত। মাতাই অর্থ ‘দেবতা’ আর পুখির অর্থ ‘পুকুর’। পুকুরের চারিদিকে ঘন সবুজ অরণ্য যেন সৌন্দর্যের দেবতা বর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কথিত আছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের জলতৃষ্ণা নিবারণের জন্য স্বয়ং জলদেবতা এ পুকুর খনন করেছেন। দেবতা পুকুরের পানি কখনোই শুকায়না। পুকুরের পানিকে স্থানীয় পাহাড়িরা দেবতার আর্শীবাদ বলে মনে করেন। দেবতা পুকুর দেবতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং পুকুরের তলদেশে গুপ্তধন লুকায়িত আছে যা দেবতারা পাহাড়া দিচ্ছে। প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিতে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ-শিশু দেবতা পুকুর দর্শনে হাজির হয়।

খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৃহৎ সামাজিক উৎসবের প্রথম দিন ‘হারি বৈসু’ উদযাপিত হচ্ছে। এর আগে ভোরবেলায় গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এই ফুলের একাংশ দিয়ে বাড়ি সাজানো হয় এবং আরেক অংশ দিয়ে মন্দির এবং পবিত্র স্থানে ফুল, ধুপ এবং দীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে জাতি, সমাজ, দেশ ও বিশ্বের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করা করবে।
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান উৎসবের প্রথম দিনকে বলা হয় হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা/বৈসুকমা এবং তৃতীয় বা শেষ দিনটিকে বলা হয় বিসি কতাল।

রূপায়ণ সিটিতে শতকন্ঠে বর্ষবরণ

হারি বৈসু’র মধ্যদিয়ে খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসব শুরু

সর্বশেষ আপডেট : ০৫:২৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

হারি বৈসু’র মধ্যদিয়ে খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু উৎসব শুরু উপলক্ষে খাগড়াছড়ি পাহাড়ের উপর ‘দেবতা পুকুরের ভীর জমিয়েছেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নর নারীরা।

ত্রিপুরাদের ধারণা, স্থানীয় ব্যক্তিদের আশীর্বাদস্বরূপ দেবতা নিজে এ পুকুর করে দিয়েছেন। তাদের মতে, এ পুকুরে গোসল করলে মনোবাসনা পূরণ হয়। খাগড়াছড়ি শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের ওপর এই পুকুরের অবস্থান। প্রতিবছর বৈসুকে কেন্দ্র করে এখানে তীর্থ মেলা বসে।
নুনছড়ি গ্রাম থেকে এক কিলোমিটারের পাহাড়ি পথ বেয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠলেই দেবতা পুকুর। এ পুকুরের স্বচ্ছ স্থির জলরাশি তীর্থযাত্রীদের মনে প্রশান্তি জোগায়।
সবুজ অরণ্যবেষ্টিত দেবতার পুকুরের দৈর্ঘ্য প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট এবং গড় প্রস্থ ৬০০ ফুটের মতো। সময়ের ব্যবধানে ‘দেবতা পুকুর’ স্থানীয় ত্রিপুরাদের তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিতে দেবতা পুকুরে বসে তীর্থ মেলা এবং তান্ত্রিক বিধান মতে ত্রিপুরাগণ যাগযজ্ঞাদি করে।
ত্রিপুরা জনঅধ্যুষিত এলাকায় এর অবস্থান বলে এটি ত্রিপুরা ভাষায় ‘মাতাই পুখিরী’ নামেই অধিক পরিচিত। মাতাই অর্থ ‘দেবতা’ আর পুখির অর্থ ‘পুকুর’। পুকুরের চারিদিকে ঘন সবুজ অরণ্য যেন সৌন্দর্যের দেবতা বর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কথিত আছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের জলতৃষ্ণা নিবারণের জন্য স্বয়ং জলদেবতা এ পুকুর খনন করেছেন। দেবতা পুকুরের পানি কখনোই শুকায়না। পুকুরের পানিকে স্থানীয় পাহাড়িরা দেবতার আর্শীবাদ বলে মনে করেন। দেবতা পুকুর দেবতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং পুকুরের তলদেশে গুপ্তধন লুকায়িত আছে যা দেবতারা পাহাড়া দিচ্ছে। প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিতে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ-শিশু দেবতা পুকুর দর্শনে হাজির হয়।

খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৃহৎ সামাজিক উৎসবের প্রথম দিন ‘হারি বৈসু’ উদযাপিত হচ্ছে। এর আগে ভোরবেলায় গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এই ফুলের একাংশ দিয়ে বাড়ি সাজানো হয় এবং আরেক অংশ দিয়ে মন্দির এবং পবিত্র স্থানে ফুল, ধুপ এবং দীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে জাতি, সমাজ, দেশ ও বিশ্বের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করা করবে।
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান উৎসবের প্রথম দিনকে বলা হয় হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা/বৈসুকমা এবং তৃতীয় বা শেষ দিনটিকে বলা হয় বিসি কতাল।