ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে দেশের ৮৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে।
এ ধাপে আরও ২৩ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও ২৬ মে ও ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও মামলাজনিত কারণে এসব উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এসব উপজেলার মধ্যে ২০ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৯ জুন।
ভোটগ্রহণের পর গণনা শেষে রাতে চলছে ফলাফল ঘোষণা। নির্বাচনে এ পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদের তালিকা তুলে ধরা হলো-
সাতক্ষীরা
জেলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লাঙল প্রতীকের প্রার্থী মশিউর রহমান বাবু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
রাঙামাটি
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাঙামাটিতে তৃতীয় ধাপে দুটি উপজেলা লংগদু ও নানিয়ারচর উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নানিয়ারচর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ মূল দলের অমর জীবন চাকমা।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে সুজিত তালুকদার এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে অনিতা চাকমা বিজয়ী হয়েছেন।
লংগদু উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বাবুল দাশ বাবু।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন মো. রকিব হোসেন এবং নারী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিজয়ী হয়েছেন ফাতেমা জিন্নাহ।
তৃতীয় ধাপে রাঙামাটির তিনটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবের কারণে বাঘাইছড়ি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
লালমনিরহাট
জেলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে ফের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো. কামরুজ্জামান সুজন।
ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এরশাদুল করিম রাজু। আর বিনা প্রতিদ্বিন্দিতায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন লতিফা বেগম লাকী।
কক্সবাজার
জেলার রামু উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সিরাজুল ইসলাম ভুট্টো (মোটরসাইকেল)।
উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিজয়ী হয়েছেন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী (আনারস)।
টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জাফর আহম্মদ (আনারস)।
নীলফামারী
জেলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুজার রহমান আনারস প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন টিয়া পাখি প্রতীকে জ্যোতির্ময় রায়। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সান্তনা চক্রবর্তী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
তৃতীয় ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ও আশুগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঞ্ছারামপুরে তৃতীয়াবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। ঘোড়া প্রতীকে তিনি ৮২ হাজার ৮১৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আমিনুল ইসলাম তুষার আনারস প্রতীকে পেয়েছেন দুই হাজার ১৬২।
অন্যদিকে আশুগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মো. জিয়াউল করিম খাঁন সাজু। মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩১ হাজার ২৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সী ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৮ হাজার ৩৪০ ভোট।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জেসমিন সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই ফলাফল বেসরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। কোনো উপজেলাতেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে কেবল মহালছড়ি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিমল কান্তি চাকমা কাপ পিরিচ প্রতীক ১০ হাজার ১৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) প্রার্থী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংজরী চৌধুরী আনারস প্রীতিকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৮৫২ ভোট।
ভোট গণনা শেষে রাতে বেসরকারিভাবে নির্বাচিতদের ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা রাজু আহমেদ।
শরীয়তপুর
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে শরীয়তপুরের ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডামুড্যা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আবদুর রশিদ গোলন্দাজ। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আলমগীর মাঝি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৭১৫ ভোট।
অন্যদিকে গোসাইরহাট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. মোশারফ হোসেন সরদার। হেলিকপ্টার প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ১৮৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাসুদ আলম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৩৯৩ ভোট।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান খলিফা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবু দাউদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইল
তৃতীয় ধাপে টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদর উপজেলায় ৪২ হাজার ৪৭ ভোট পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা দোয়াত কলম প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ২০৮ ভোট।
নাগরপুরে প্রয়াত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেনের ছেলে কেএম সালমান শামস আনরস প্রতীকে ৩৫ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুস সামাদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩০৬ ভোট।
এছাড়াও দেলদুয়ারে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদুল হাসান মারুফ কাপ পিরিচ প্রতীকে ২৯ হাজার ২৯৭ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক পেয়েছেন ১৮ হাজার ৯৫৩ ভোট।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মতিয়ূর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফরিদপুর
তৃতীয় ধাপে ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদরপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম। আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪০ হাজার ৩৩৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শফিকুর রহমান পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫০৮ ভোট।
ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে কাওসার ভুইয়া বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। দোয়াত কলম প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬২ হাজার ৮৭০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপসমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৩০ ভোট।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।