নেত্রকোনার পূর্বধলায় নিজ মেয়েকে হত্যার পর থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন মা জোসনা বেগম (৪৭)। তবে শেষ রক্ষা হলো না ঘাতক মায়ের। দীর্ঘ দুই বছর পর সোমবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে জোসনা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত জোসনা বেগম উপজেলার বৈরাটি ইউনিয়নের দরুণ বৈরাটি গ্রামের মৃত এমএল মিয়ার স্ত্রী।
জানা যায়, গত ২০২২ সালের ২২ আগস্ট রাতে উপজেলার দরুণ বৈরাটি গ্রামের মৃত এমএল মিয়ার মেয়ে সুমী কাউছার (১৮) প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে তাদের বাড়ির পাশে টয়লেটে যায়। টয়লেট শেষে হঠাৎ মেয়ে চিৎকার দিলে মা জোসনা বেগম দৌড়ে গিয়ে তার মেয়েকে ঘরে নিয়ে আসার পর মেয়ে মারা যায়। এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে দেন জোসনা বেগম। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেলে জোসনা বেগম বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। এদিকে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করে।
পূর্বধলা থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার প্রায় ৭-৮ মাস পর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলা দায়েরের পর বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করেও ঘটনার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে গত ৬ মে রাতে গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের মা জোসনা বেগমকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর মামলার বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জোসনা বেগম স্বীকার করেন, তার মেয়ে সুমী কাউসারকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন।
তিনি কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন, সুমী কাউসার তার অবাধ্য হয়ে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করত। ইতোপূর্বে তার মেয়ে তাকে একাধিকবার শারীরিক আঘাত করাসহ ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করেছিল। নিষেধ করা সত্ত্বেও একটি ছেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে। ঘটনার দিন গভীর রাতে মোবাইল ফোনে কথা বলেতে থাকে, মোবাইল ফোনে কথা বলতে নিষেধ করলে সুমী কাউসার তাকে শারীরিক আঘাত করে। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সুমীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।