অবৈধ গ্যাস ও পানি দিয়ে মাসে আয় কোটি টাকা।
রাজধানীর মিরপুর পল্লবীর পল্টিবাজ খ্যাত রাজু ওরফে নাপাক রাজু। যিনি ১৬ বছরে হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক।
রাজু ওরফে নাপাক রাজু, থাকেন রাজধানীর মিরপুর পল্লবীর পূর্ব কুর্মিটোলা, বগুড়া ক্যম্পে। তার রয়েছে বিশাল ক্ষমতা, পুলিশ, সস্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ সহ সব ধরনের মানুষের সাথে লিয়াজোঁ করেই চলছে তার কার্যক্রম।তার রয়েছে তাত, তথা কারচুপির ব্যবসা। তবুও তিনি ক্যাম্প ও বস্তি সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১৫ টি বাড়ীর মালিক। কিন্তু প্রশ্ন একটা তাত বা কারচুপির ব্যবসা করে ১০ থেকে ১৫ টি বাড়ীর মালিক হওয়া সম্ভব কি? আমরা বিষয়টি একটু বুঝতে চাই? বিগত ১৫ বছর আগে তাত শিল্প ছিলো বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প বা কর্ম। একটি সময় ছিলো যখন দেশ ও দেশের বাহিরে বাংলাদেশের বেনারশী শাড়ির চাহিদা ছিলো ব্যাপক। বিয়ে মানে লাল বেনারশী। পরে যুক্ত হয় কারচুপির শাড়ি।বাংলাদেশের অবাঙ্গালীদের শুক্রবার থাকতো ঈদ বা উৎসবের। মত তারা সারা সপ্তাহ জুড়ে এই বেনারশী শাড়ির কাজ করতো। আর সপ্তাহ শেষে, যে টাকা পেত, তা বর্তমান সময়ে একজন সরকারী চাকুরিজীবির বেতনের সমান ছিলো। কিন্তু পরবর্তী সময় সেই জায়গাটি দখল করে ইন্ডিয়ার কাপোরের বাজার। আস্তে আস্তে বাংলাদেশের বেনারশী ও কারচুপির ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যায়। অনেক বেনারশীর ব্যবসায়ীরা তাদের কারখানা বন্ধ করে দেন। কিন্তু এই রাজু ওরফে নাপাক রাজুর ব্যাবসা থাকে চাঙ্গা। সেই বিষয়টা অনেকের নজর কাড়ে। কি ভাবে সম্ভব এটা ? একটা সময় যে মাহাজনরা ২০ জন ৫০ জন কর্মচারী পালত তারা আজ পথের ফকির, অন্যনের চাকুরি করে জীবন যাপন করছে।
কিন্তু রাজুর বিষয়টা একটু ভিন্ন।তিনি আরও উন্নতি করেছেন।একের পর এক নজির বিহীন ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন। কারো বিয়ে না হলে তার বিয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। কারো টাকা ধার লাগলে বিনা স্বার্থে মোটা অঙ্কের টাকা ধার দিচ্ছেন। ৮ লক্ষ টাকা খরচ করে ক্যম্পে পানির পাম্প বসিয়েছেন। আবার ২০২৪ সালে তিনি কাউন্সিলর নির্বাচন করবেন, এমন মন মানসিকতা তৈরি করে এলাকায় পোষ্টার লিফলেট বিতরন করেছেন। ২০২৪ সালে তিনি বেশ কয়েকটি গরুও কুরবানি করে সাধারন মানুষের মাঝে বিতরণ করেছেন। কাউন্সলর নির্বাচন করতে বিভিন্ন সংগঠনের বড় বড় নেতা কর্মীদের সাথে একাধিক সময় মিটিং ও করেছেন তিনি।এলাকায় যখন-তখন যাকে-তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে সাহায্য করেন। তবে প্রশ্ন একটাই এত টাকা আসে কথা থেকে। সেটাই জানতে চাই আমরা।
যখন এলাকায় খোঁজ নিয়েছি তখনি বেরিয়ে আসে একের পর এক চানচল্যকর তথ্য। রাজু ওরফে নাপাক রাজুর, ভাগিনা করেন মাদক ব্যবসা।সেই ভাগিনাকে সেল্টার দেন মামা খোদ নিজে। তার ভাগিনা একাধিক সময় মাদকের বড় বড় চালান নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকও হয়েছেন। সেই ভাগিনাকে ছাড়াতে, অনেক সময় মোটা অঙ্কের টাকাও ঘুষ দিয়েছেন। এক সময় পল্লবী থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা ওসি পারভেজ ইসলাম এক মাদক ব্যবসায়ীর সুপারিশ করার কারনে সারা রাত হাজতে আটকিয়ে রেখেছিলেন। তাছাড়া পল্লবীর আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী শাহজাদীর সাথে রয়েছে গভীর সম্পর্ক। রাজু পুলিশকে অনেক সুন্দর ভাবে ম্যানেজ করতে পারেন বলে, পুলিশও বিভিন্ন সময় রাজুকে অভিযানের গোপন কথাগুলো বলে দেন। আর সেই তথ্যগুলো মাদক ব্যবসায়ী শাহজাদীর কাছে পৌছে দেন রাজু। তার কারনে পল্লবীর র্শীষ মাদক ব্যবসায়ী থেকে জান আইনের ধরাছোয়ার বাহিরে। চলেন এলাকার অনেক সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে। কেউ তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে অফার করেন মোটা অঙ্কের টাকা। অনেকে টাকার কাছে বিক্রী হলেও, যারা তার টাকার কাছে বিক্রী হন না তাদের বিরুদ্ধে করেন থানায় অভিযোগ। আর থানার কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তারাও কনো তদন্ত ছাড়াই নিয়ে নেন অভিযোগ ।
রাজু ওরফে নাপাক রাজুর বিষয়ে যখন এ প্রতিবেদক অনুসন্ধানে মাঠে নামে তখন আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। স্থানীয় সূত্র বলছে, মিরপুর পল্লবীর পূর্ব কুর্মিটোলা বগুড়া ক্যাম্পের ভিতরে রয়েছে দুই (২)টি বহুতল ভবন এবং ক্যাম্পের সামনের নতুন রাস্তা নামের প্রধান সড়ক জুড়ে আরও দুইটি (২) টি বহুতল ভবন রয়েছে। তাছাড়া সেই ক্যাম্পের পূর্ব দিকের বস্তিতে ছয়(৬) রুম বিশিষ্ট একটি প্লটও রয়েছে। তিনি এমন সব সম্পদ নামে বেনামে দেশের বিভিন্ন জায়গাতে করেছেন বলেও একাধিক সূত্র বলছে। সূত্রটি আরও বলছে তার বিষয়ে সঠিক তদন্ত করা হলে তার সম্পদের আরও তথ্য পাওয়া যাবে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায় রাজু ওরফে নাপাক রাজুর পল্লবীর পূর্ব কুর্মিটোলা বগুড়া ক্যাম্পে অবৈধ্য গ্যাস ও পানির সংযোগ দিয়ে মাসে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন। নতুন গ্যাসের চুলার সংযোগ প্রতি রাজুকে দিতে হয় ২০ হাজার টাকা এবং সেই সংযোগের ভাড়া হিসেবে প্রতি মাসে দিতে হয় ১হাজার টাকা। এই ক্যাম্পেই রয়েছে ১হাজারেরও অধিক পরিবারের বসবাস। এ সকল অভিযোগ নিয়ে রাজুকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এমন সব দূর্নীতির সাথে জড়িয়ে থেকেও আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে এখনো প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে এই দূর্নীতিবাজ রাজু ওরফে নাপাক রাজু।